আন্তর্জাতিক নারী দিবসের চেতনায় নিজের চিন্তাশীলতা নিয়ে লিখেছেন আফরোজা শারমিন (শুভহা)

আজ ৮ ই মার্চ,আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে, বিভিন্ন আঙ্গিকে বা বিভিন্ন ভাষায় এই দিনটি উদযাপন করা হলেও এর মূল লক্ষ্য একটাই। আর তা হচ্ছে নারীর প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা নিশ্চিত করা এবং বৈষম্য দূর করা।যার মাধ্যমে নারীদের আর্থিক,সামাজিক, রাজনৈতিক, স্বাধীনতা ও সমতার গুরুত্ব ও সচেতনতা নিশ্চিত করা যায়।

Source: https://www.harvardmagazine.com/2011/09/the-veils-revival

ধর্মের দিক বিবেচনায় নিয়ে ইসলাম ধর্মে নারীদের শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা দেয়া হয়েছে।মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, “মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত” (আত-তারগিবঃ ১১৯৪)। তিনি আরো বলেন , “অবশ্যই প্রয়োজনে তোমাদের নারীদের বাহিরে যাওয়ার অনুমতি রয়েছে” (বুখারিঃ ৪৪৩৬) ।

বর্তমান বিশ্ব গঠনের শুধু মুসলিম নারীরাই নয়, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর নারীরাও আজ তাদের নৈপুণ্য দেখাচ্ছে, বৈষম্যের নিপাত তো তাই এখান থেকেই শুরু।পাতাল সমুদ্র জয় থেকে শুরু করে মহাকাশ জয় হোক, ভয়ংকর সৌন্দর্যে ঘেরা বরফের সাদা চাদরের ঢেকে থাকা এভারেস্টের দাম্ভিক ছোয়া থেকে শুরু করে পাহাড় বনাঞ্চল দাপিয়ে বেড়ানো হোক অথবা পরম যত্নে সংসারের ২ পয়সা জমানোর হিসাব থেকে শুরু করে পুরুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ব্যবসার চৌকশ হিসাব রাখা এসবই তো করেছে আজকের নারী। তবে এত কিছুর পরেও কিছু কিছু মস্তিষ্ক কি করে নারীদের এসব অবদানকে অস্বীকার করবে?

Source: The Economic Times ( Dec 05, 2020)

অন্যান্য আরো ৮০ টির ও বেশি দেশের মতো বাংলাদেশেও এই দিনটিকে যথাযথ সম্মান ও গুরুত্বের সাথে পালন করা হয়। খুবই অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের দেশের নারীরাও বিচরণ করছে সর্বক্ষেত্রে।যেখানে পোশাক শিল্পের প্রায় ৬৫ শতাংশই নারী,বাংলাদেশ সুগঠনের নেতৃত্বেও রয়েছে “বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী” একজন সুযোগ্য নারী। এছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্য, মিডিয়া, তথ্যপ্রযুক্তি আরো কত কি! চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে অনেক আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে। আর তাই এই বর্তমান প্রেক্ষাপটে যদি কোন নারী ঘরে এবং বাহিরে একসাথে কাজ সামলায় এবং তাতে যদি সমাজ অবাক হয় তবে ধরে নিতে হবে তারা বিংশ শতাব্দীতে থেকেও আধারে রয়েছে।কারণ বর্তমান পুরুষেরাও মনে করে নারীদের অবদান- তাদের জীবন গড়া থেকে শুরু করে সভ্যতার পর্যন্ত ভূমিকা অতুলনীয়।

Source: https://givingcompass.org/article/the-time-is-now-addressing-the-worlds-greatest-human-rights-challenge

বাংলাদেশ নারী ক্ষমতায়নের ব্যাপারে খুবই সোচ্চার। বাংলাদেশ শুধু এই দিনটিকে পালন করার মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ থাকেনা বরং নারীদের অধিকার ক্ষমতায়নে রয়েছে- নারী বিষায়ক মন্ত্রণালয়। যেখানে নারীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি বিভিন্নভাবে সহায়তা করা হয়। তবু ও কিছু কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটে যা নারীকে হেয় করে রচনা করা হয়,বাধা দেওয়া হয়,কিংবা থামিয়ে দেয়া হয় স্বপ্ন ছুঁতে।

“নারী তোমার ডানায় আগুন,দীর্ঘ হোক তোমার উড়ান।তোমার চক্ষুস সুচারুর দৃষ্টির মতই তোমার স্বপ্ন ঝলমলে।শুধু বিশ্বাসটুকু রাখো যে তুমি পারবে। “

বর্তমান বাংলাদেশ সরকার উদ্যোক্তা উন্নয়নের কাজ করছে। আমি নিজেও এই মহান কাজের সাথে যুক্ত আছি। আর তাই খুব কাছ থেকে উদ্যোক্তাদের দেখার সুযোগ হয়েছে আমার। আমি দেখেছি পিছিয়ে পড়া নারীরা কিভাবে হুমড়ি খেয়ে বর্তমানে তাদের উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। কিভাবে একটু একটু করে তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এগোচ্ছে। নারীর এই অগ্রগতির আমি নিজেও একটি প্রমাণ। নারীদের এই যাত্রা সফল ও সুন্দর হোক, পুরুষেরা তাদের সাহস হোক- ভয় নয়। ডিজিটাল প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে এগিয়ে যাক নারীরা, নিপাত যাক সকল বৈষম্য।

আফরোজা শারমিন (শুভহা)
ট্রেইনার,ইন্টারপ্রেনারশিপ ডেভেলপমেন্ট —ইউসেপ বাংলাদেশ।
“ইয়ুত পার্লামেন্ট”- ঢাকা ৫ এম.পি।
“ইয়ুত পার্লামেন্ট”- ডেপুটি কোঅর্ডিনেটর।

Categories: Feature

0 Comments

Leave a Reply

Avatar placeholder

Your email address will not be published. Required fields are marked *